নিজস্ব প্রতিবেদক : ব্যাংকের যোগসাজশে এক অভিনব ঋণ জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে এবি ব্যাংকে। ব্যাংকটির গুলশান শাখা থেকে কলেজছাত্রসহ এক বেসরকারি চাকরিজীবীর নামে ৩৫০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করা হয়েছে। ঋণের আবেদদেনর দিনেই শাখা ম্যানেজার সরেজমিন পরিদর্শন করে বাস্তবে ব্যবসা না থাকার পরও বড় আমদানিকারক বলে প্রতিবেদন দেন। আর বোর্ড তা দ্রুত অনুমোদন দেয়। এই ঋণ জালিয়াতির মূল ব্যক্তি হচ্ছেন আলী হায়দার রতন নামে এক ঠিকাদার।
বাংলাদেশ ব্যাংকে অবস্থানরত আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে সুপারিশ করেছে। ঋণের নথিপত্র অনুযায়ী, ব্র্যান্ডশেয়ার ট্রেডিং কোম্পানির ৯০ শতাংশ শেয়ারের মালিক মোহাম্মদ আতাউর রহমান একজন ছাত্র। আর ১০ শতাংশ শেয়ারের মালিক মামুনুর রশিদ একজন বেসরকারি চাকরিজীবী। ৯ ফেব্রুয়ারি ৩৫০ কোটি টাকা ঋণ সুবিধা অনুমোদন করে এবি ব্যাংক। এর মধ্যে ২৫০ কোটি টাকা ঋণপত্র খোলার সীমা ও ১০০ কোটি টাকা ব্যাংক গ্যারান্টি। আবার ২৫০ কোটি টাকা ঋণপত্র সীমার মধ্যে ১৫০ কোটি টাকা বিশ্বাসের ঋণ ও ১০০ কোটি টাকা মেয়াদি ঋণে রূপান্তর করা যাবে। অর্থাৎ ঋণপত্রের দায় শোধ না করলে সেই ঋণ মেয়াদি ঋণে রূপান্তর করতে বাধা নেই।
দুদকে পাঠানো চিঠিতে বিএফআইইউ উল্লেখ করে, আমদানি, রপ্তানি ও সরবরাহকারী হিসেবে গত বছরের ৯ জুন যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর পরিদপ্তর (আরজেএসসি) থেকে নিবন্ধন নেয় ব্র্যান্ডশেয়ার ট্রেডিং লিমিটেড। এরপর ৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে ট্রেড লাইসেন্স নেয়। গত বছরের ৭ নভেম্বর ১০ হাজার টাকা জমা দিয়ে এবি ব্যাংকের গুলশান শাখায় কোম্পানিটির চলতি হিসাব খোলা হয়। এরপর গত ১০ জানুয়ারি ৩৫০ কোটি টাকা ঋণ চেয়ে আবেদন করে ব্র্যান্ডশেয়ার ট্রেডিং। আর্থিক গোয়োন্দা ইউনিট বিএফআইইউ এই ঋণ আটকে দিয়ে পরিদর্শন করে দেখেছে, এই ঋণের প্রকৃত সুবিধাভোগী আলী হায়দার রতন নামে ঠিকাদার। তার ইনফ্রাটেক কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডের ভেতরেই নামমাত্র ব্র্যান্ডশেয়ার ট্রেডিং লিমিটেডের কোম্পানিটির কার্যালয়। এই ঋণের জামানত প্রদান, ব্যক্তিগত গ্যারান্টি, করপোরেট গ্যারান্টিসহ সবই করেছেন আলী হায়দার রতন। এর পাশাপাশি ইনফ্রাটেক কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডের নামে ১৬ কোটি টাকা কর্মক্ষমতা গ্যারান্টি সুবিধা দিয়েছে এবি ব্যাংক। এই ঋণের সুবিধাভোগী কে, এ বিষয়ে ব্যাংকের পক্ষ থেকে কেউ কথা বলতে রাজি হননি। তবে এবি ব্যাংকের পক্ষে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদুল গণমাধ্যমকে বলেন, যথাযথ নিয়ম মেনে ঋণটি অনুমোদন করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত জামানত আছে। অন্য একটি প্রতিষ্ঠান করপোরেট গ্যারান্টিও দিয়েছে। ঋণ অনুমোদন হলেও কোনো সুবিধা এখন পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।
সংবাদ শিরোনাম ::
এবি ব্যাংকে ৩৫০ কোটি টাকার ভুয়া ঋণ, ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ
জনপ্রিয় সংবাদ