ঢাকা ০৯:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

একাত্তরে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ

  • আপডেট সময় : ০১:৫৯:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩
  • ৩৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে সংঘটিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। তবে বিষয়টি সহজ নয়, কারণ অনেক শক্তিশালী রাষ্ট্র ওই সময়ে পাকিস্তানকে সহায়তা দিয়েছিল। তবে বাংলাদেশ এ বিষয়ে কূটনৈতিক প্রচেষ্ঠা অব্যাহত রেখেছে। গতকাল শনিবার (২৫ মার্চ) বাংলাদেশে গণহত্যা দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এ কে এম মোজাম্মেল হক ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এই তথ্য জানান।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক দেশ বাংলাদেশের পক্ষে না থাকলেও বিশ্বের জনগণ আমাদের পক্ষে ছিল। সেকারণে মাত্র ৯ মাসের মধ্যে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করতে পেরেছি।’ লিবিয়া, ইরাক বা আফগানিস্তান বা অন্য কোনও দেশ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের নীতি বাস্তবায়ন করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরাও সংসদে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস হিসাবে আখ্যায়িত করেছি। জাতীয়ভাবে পালন করছি এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। আমরা ন্যয়ের পক্ষে ছিলাম। তারা স্বাধীনতা যুদ্ধকে বিচ্ছিন্নতাবাদী আখ্যায়িত করার জন্য অনেক ষড়যন্ত্র করেছিল। কিন্তু দুরদর্শী বঙ্গবন্ধু সেই ফাঁদে পা দেননি বলে তিনি জানান। মন্ত্রী বলেন, ‘আজ মোড়লরাই রোহিঙ্গাদের গণহত্যার স্বীকৃতি দিল। আমরা ধন্যবাদ জানাই এই স্বীকৃতির জন্য। কিন্তু বাংলাদেশের স্বীকৃতি নাই। তারা দেয় না। কারণ এটি সবাই বোঝে যে তাদের প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততার কারণে তারা স্বীকৃতি দেয় না।’
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘যে কোনও কারণেই হোক, ১৯৭১ সালে অনেক রাষ্ট্র পাকিস্তানকে সমর্থন দিয়েছিল এবং ওই রাষ্ট্রগুলো এখন পৃথিবীব্যাপী গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের বিষয়ে জোরালো বক্তব্য দেয় ও অনেক রাষ্ট্রকে এ বিষয়ে তাগাদা দিয়ে থাকে।’ তিনি বলেন, সেই রাষ্ট্রগুলো, আমরা না চাইলেও বাংলাদেশের অনেক আভ্যন্তরীণ বিষয়ে কথা বলে। কিন্তু আজ ২৫ মার্চ বাংলোদেশ গণহত্যা দিবসে তারা কী বলছে সেটির দিকে আমরা তাকিয়ে থাকবো। বিশেষ কোনও রাষ্ট্রের উদ্দেশে নয়, কিন্তু ৫২ বছর পরে ঘটনা স্বীকার করে নিলে কেউ খাটো হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমান বিশ্বের বিবদমান একাধিক রাষ্ট্র এক অর্থে বলতে গেলে গণহত্যার পক্ষে ছিল এবং তারা অব্যাহতভাবে পাকিস্তানকে সামরিক অস্ত্র সরবরাহ করে গেছে। তারা পাকিস্তানকে, ইয়াহিয়া খানকে, টিক্কা খানকে – তাদের বর্বরতা থেকে নিবৃত্ত করতে পারেনি।’ তিনি বলেন, আমরা বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্র হিসেবে ওই সব রাষ্ট্রের কাছে আবেদন জানাবো তারা যেন বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের জন্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক মানবাধিকারকর্মী প্যাট্রিক বার্জেস মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন যে আন্তর্জাতিকভাবে আমরা বিভিন্ন দেশের গণহত্যা সম্পর্কে জানি। কিন্তু বাংলাদেশের গণহত্যা সম্পর্কে সে ধরনের আলোচনা হয়না। উদাহরণ হিসাবে তিনি জানান, ইস্ট তিমুরে মাত্র সাড়ে ছয় লাখ লোকের বাস এবং সেখানে গণহত্যা হযেছে সেটি পুরো পৃথিবী জানে। কিন্তু বাংলাদেশে ৩০ লাখ মারা যাওয়ার পরেও সে সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী প্রচারণা নেই।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার লার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

একাত্তরে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ

আপডেট সময় : ০১:৫৯:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে সংঘটিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। তবে বিষয়টি সহজ নয়, কারণ অনেক শক্তিশালী রাষ্ট্র ওই সময়ে পাকিস্তানকে সহায়তা দিয়েছিল। তবে বাংলাদেশ এ বিষয়ে কূটনৈতিক প্রচেষ্ঠা অব্যাহত রেখেছে। গতকাল শনিবার (২৫ মার্চ) বাংলাদেশে গণহত্যা দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এ কে এম মোজাম্মেল হক ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এই তথ্য জানান।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক দেশ বাংলাদেশের পক্ষে না থাকলেও বিশ্বের জনগণ আমাদের পক্ষে ছিল। সেকারণে মাত্র ৯ মাসের মধ্যে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করতে পেরেছি।’ লিবিয়া, ইরাক বা আফগানিস্তান বা অন্য কোনও দেশ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের নীতি বাস্তবায়ন করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরাও সংসদে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস হিসাবে আখ্যায়িত করেছি। জাতীয়ভাবে পালন করছি এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। আমরা ন্যয়ের পক্ষে ছিলাম। তারা স্বাধীনতা যুদ্ধকে বিচ্ছিন্নতাবাদী আখ্যায়িত করার জন্য অনেক ষড়যন্ত্র করেছিল। কিন্তু দুরদর্শী বঙ্গবন্ধু সেই ফাঁদে পা দেননি বলে তিনি জানান। মন্ত্রী বলেন, ‘আজ মোড়লরাই রোহিঙ্গাদের গণহত্যার স্বীকৃতি দিল। আমরা ধন্যবাদ জানাই এই স্বীকৃতির জন্য। কিন্তু বাংলাদেশের স্বীকৃতি নাই। তারা দেয় না। কারণ এটি সবাই বোঝে যে তাদের প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততার কারণে তারা স্বীকৃতি দেয় না।’
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘যে কোনও কারণেই হোক, ১৯৭১ সালে অনেক রাষ্ট্র পাকিস্তানকে সমর্থন দিয়েছিল এবং ওই রাষ্ট্রগুলো এখন পৃথিবীব্যাপী গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের বিষয়ে জোরালো বক্তব্য দেয় ও অনেক রাষ্ট্রকে এ বিষয়ে তাগাদা দিয়ে থাকে।’ তিনি বলেন, সেই রাষ্ট্রগুলো, আমরা না চাইলেও বাংলাদেশের অনেক আভ্যন্তরীণ বিষয়ে কথা বলে। কিন্তু আজ ২৫ মার্চ বাংলোদেশ গণহত্যা দিবসে তারা কী বলছে সেটির দিকে আমরা তাকিয়ে থাকবো। বিশেষ কোনও রাষ্ট্রের উদ্দেশে নয়, কিন্তু ৫২ বছর পরে ঘটনা স্বীকার করে নিলে কেউ খাটো হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমান বিশ্বের বিবদমান একাধিক রাষ্ট্র এক অর্থে বলতে গেলে গণহত্যার পক্ষে ছিল এবং তারা অব্যাহতভাবে পাকিস্তানকে সামরিক অস্ত্র সরবরাহ করে গেছে। তারা পাকিস্তানকে, ইয়াহিয়া খানকে, টিক্কা খানকে – তাদের বর্বরতা থেকে নিবৃত্ত করতে পারেনি।’ তিনি বলেন, আমরা বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্র হিসেবে ওই সব রাষ্ট্রের কাছে আবেদন জানাবো তারা যেন বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের জন্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক মানবাধিকারকর্মী প্যাট্রিক বার্জেস মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন যে আন্তর্জাতিকভাবে আমরা বিভিন্ন দেশের গণহত্যা সম্পর্কে জানি। কিন্তু বাংলাদেশের গণহত্যা সম্পর্কে সে ধরনের আলোচনা হয়না। উদাহরণ হিসাবে তিনি জানান, ইস্ট তিমুরে মাত্র সাড়ে ছয় লাখ লোকের বাস এবং সেখানে গণহত্যা হযেছে সেটি পুরো পৃথিবী জানে। কিন্তু বাংলাদেশে ৩০ লাখ মারা যাওয়ার পরেও সে সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী প্রচারণা নেই।