নিজস্ব প্রতিবেদক: আমরা এক ইঞ্চিও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আটকাবো না। আমাদের সরকারের উদ্দেশ্যই হচ্ছে মুক্ত গণমাধ্যম, মুক্ত সাংবাদিকতা বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। শফিকুল আলম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার কোনও সাংবাদিক বা সংবাদপত্রে বিন্দুমাত্র হস্তক্ষেপ করেনি এবং করবে না। অন্তর্বর্তী সরকার স্বাধীন সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী। গত চার মাসে আমরা কাউকে মানা করিনি। আপনারা আমাদের ভুলত্রুটি দেখিয়ে দিন, ধরিয়ে দিন। ক্ষমতায় থাকলে অনেক কিছু বোঝা যায় না। তাই আপনারা দায়িত্ব নিয়ে ভুল ধরিয়ে দিন। তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন কাজ শুরু করেছে। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তী সরকার গণমাধ্যমকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চায়। গণমাধ্যম মালিকদের উদ্দেশ্যে শফিকুল ইসলাম বলেন, গণমাধ্যম মালিকরা যেন সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করতে না পারে এ বিষয়ে আমরা কাজ করছি। সাংবাদিকদের বেতন না দিতে পারলে মালিকদের বলবো প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিন।
একাত্তরের পুনরাবৃত্তি হয়েছে ২৪ এর জুলাইয়ে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শ ও দেশ গড়ার স্বপ্ন ধারণ করে অন্তর্বর্তী সরকার। ৭১’ এর হানাদার বাহিনীর জুলুমের পুনরাবৃত্তি হয়েছে ২৪ এর জুলাইয়ে। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। শফিকুল আলম বলেন, যে নতুন বাংলাদেশ আমরা স্বপ্নে দেখছি, যে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে ড. ইউনূস এগিয়ে যাচ্ছেন, এটা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের যে স্বপ্ন ছিল তারই একটা চলমান প্রক্রিয়া। সেই আলোকেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। তারা যে জন্য যুদ্ধ করেছিলেন, দেশকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন, সেই এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়েই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। বুদ্ধিজীবীদের আদর্শ ড. ইউনূস ও তার দল ধারণ করে। একাত্তরের সঙ্গে জুলাই অভ্যুত্থানের মিল খুঁজে তিনি বলেন, ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে যেভাবে ঠকঠক করে ওনাদের (বুদ্ধিজীবী) ধরে নিয়ে গিয়েছিল পাকহানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা, এরকম পুনরাবৃত্তি আমরা জুলাইতে দেখেছি। আপনারা দেখেছেন, আমাদের ছয় জন শীর্ষ ছাত্রনেতাকে কীভাবে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। বুদ্ধিজীবীরা তাদের উত্তরসূরিদের জন্য যেভাবে তাদের লেখা লিখে গিয়েছিলেন, আহনাফ বা শিক্ষার্থীরাও তাদের মায়ের কাছে চিঠি লিখছে যে, তারা যুদ্ধ করতে যাচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব আরও বলেন, আমরা যারা পুরো জুলাই গণআন্দোলন, গণঅভ্যুত্থানে ছিলাম তারা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মতাদর্শ, তাদের দেশ গড়ার স্বপ্ন পুরোপুরি ধারণ করি এবং সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছি। এর আগে, শনিবার সকাল ৭টার দিকে প্রথমে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, পরে ৭টা ১৫ মিনিটের দিকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির শ্রেষ্ঠ মেধাবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।