ঢাকা ০১:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আরাভ, রবিউল, হৃদয় নামে কাউকে চিনি না

  • আপডেট সময় : ০২:৪৬:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মার্চ ২০২৩
  • ১৪৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ বলেছেন, আরাভ ওরফে রবিউল ওরফে হৃদয় নামে কাউকে তিনি চেনেন না। এমনকি তাঁর সঙ্গে প্রাথমিক পরিচয়ও নেই।
ঢাকায় পুলিশ হত্যার আসামি হয়েও দুবাইয়ে সোনার বড় ব্যবসায়ী বনে যাওয়া রবিউল ইসলামকে নিয়ে আলোচনার মধ্যে গতকাল শনিবার এক ফেসবুক পোস্টে এ কথা বলেছেন বেনজীর আহমেদ। তিনি লিখেছেন, ‘সম্মানিত দেশবাসী, আমি আপনাদের সবাইকে আশ্বস্ত ও সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিত করতে চাই যে “আরাভ ওরফে রবিউল ওরফে হৃদয়” নামে আমি কাউকে চিনি না। আমার সাথে তার এমনকি প্রাথমিক পরিচয়ও নাই।’
ছয় মাসের কম সময় আগে বাংলাদেশ পুলিশের প্রধানের পদ থেকে অবসরে গেছেন বেনজীর আহমেদ। এর আগে ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার, র‌্যাবের মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘আমি আমার ল এনফোর্সমেন্ট ক্যারিয়ারের পুরোটা সময় খুনি, সন্ত্রাসী, ড্রাগ ব্যবসায়ী, চোরাকারবারি, ভেজালকারী ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি, কখনোই সখ্যতা নয়।’
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে গত বুধবার এক জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আরাভ জুয়েলার্সের উদ্বোধন করা আরাভ খান এখন বাংলাদেশে তুমুল আলোচিত নাম। এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ক্রীড়া ও বিনোদনজগতের অনেক তারকাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ফেসবুকে একাধিক পোস্ট দিয়েছিলেন আরাভ খান। তখনই তাঁকে শনাক্ত করে ফেলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা। গোয়েন্দা পুলিশের তথ্যমতে, আরাভ জুয়েলার্স নামের ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক আরাভ খানের আসল নাম রবিউল ইসলাম। বাংলাদেশের গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় তাঁর বাড়ি। তিনি সোহাগ মোল্লা, হৃদয় শেখ, আপন—রকম কয়েকটি নামে পরিচিত। ২০১৮ সালের ৭ জুলাই ঢাকায় পুলিশের পরিদর্শক মামুন এমরান খান খুন হন। সেই খুনের আসামি হয়ে দেশ ছেড়েছিলেন রবিউল। ডিবি বলছে, দেশ থেকে পালিয়ে রবিউল ইসলাম প্রথমে ভারতে যান। সেখানে আরাভ খান নামে পাসপোর্ট সংগ্রহ করে দুবাইয়ে চলে যান। এখন তিনি দুবাইয়ের বড় সোনা ব্যবসায়ী।
আমরা আরাভ খানকে খুঁজে বের করতে সহযোগিতা করেছি: হিরো আলম : খুনের মামলার পলাতক আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানকে গ্রেপ্তার করতে না পারা পুলিশের ব্যর্থতা বলে মনে করেন আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম। তিনি বলছেন, ‘খুনের মামলায় অভিযুক্ত একজন আসামিকে এত দিন খুঁজে না পাওয়া বা গ্রেপ্তার করতে না পারার ব্যর্থতা পুলিশের। আমরা তাঁকে খুঁজে বের করতে পুলিশকে সহযোগিতা করেছি। আমরা ফেসবুকে পোস্ট না দিলে, দুবাই না গেলে আরাভ খানের আসল পরিচয় কেউ জানত না।’
দুবাই থেকে মুঠোফোনে গতকাল শনিবার একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। রবিউল ইসলামের সোনার দোকান ‘আরাভ জুয়েলার্সের’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ শেষে হিরো আলম আজ রোববার দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন। সকাল আটটায় ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা আছে তাঁর। তদন্তের প্রয়োজনে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও হিরো আলমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে, গোয়েন্দা পুলিশের এমন বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে হিরো আলম বলেন, ‘আইনের প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। যেকোনো মামলা তদন্তের প্রয়োজনে অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বা সন্দেহভাজন কোনো ব্যক্তিকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করতেই পারে। কিন্তু পুলিশ খুনের সঙ্গে সাকিব আল হাসানের মতো জনপ্রিয় ক্রিকেটার ও আমার সংশ্লিষ্টতা কোথায়, সেটা আগে পুলিশকে বলতে হবে।’
আরাভ খান পুলিশ কর্মকর্তা খুনের মামলার আসামি এই তথ্য আগে থেকে জানতেন না দাবি করে হিরো আলম বলেন, ‘তাঁর (আরাভ খান) সঙ্গে পরিচয় ফেসবুকে। একজন বাংলাদেশি উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি দাওয়াত করেছেন। আমরা প্রবাসী উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দিতে তারকারা সেখানে গিয়েছি। আরাভ খানের জায়গায় দুবাই থেকে যেকোনো বাংলাদেশি ব্যবসায়ী দোকান উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানালেও সেখানে যেতাম।’
হিরো আলম মন্তব্য করেন, ‘রবিউল ইসলাম সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে এসে স্বর্ণের দোকান খুলে ব্যবসা করছেন। এটা এত দিন অজানা ছিল। অজানাই হয়তো থাকত। কিন্তু সাকিব আল হাসান ও হিরো আলম তাঁর স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন করতে এসেছেন বলেই আরাভ খান সামনে চলে এসেছেন। আমাদের কারণেই তাঁর আসল পরিচয় উন্মোচিত হয়েছে। পলাতক আসামির সন্ধান পেতে সহযোগিতা করায় সাকিব আল হাসান ও হিরো আলমকে পুলিশের পক্ষ থেকে পুরস্কৃত করা উচিত। উল্টো পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের নামে আমাদের হয়রানি করার ফন্দি করছে।’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

আরাভ, রবিউল, হৃদয় নামে কাউকে চিনি না

আপডেট সময় : ০২:৪৬:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ বলেছেন, আরাভ ওরফে রবিউল ওরফে হৃদয় নামে কাউকে তিনি চেনেন না। এমনকি তাঁর সঙ্গে প্রাথমিক পরিচয়ও নেই।
ঢাকায় পুলিশ হত্যার আসামি হয়েও দুবাইয়ে সোনার বড় ব্যবসায়ী বনে যাওয়া রবিউল ইসলামকে নিয়ে আলোচনার মধ্যে গতকাল শনিবার এক ফেসবুক পোস্টে এ কথা বলেছেন বেনজীর আহমেদ। তিনি লিখেছেন, ‘সম্মানিত দেশবাসী, আমি আপনাদের সবাইকে আশ্বস্ত ও সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিত করতে চাই যে “আরাভ ওরফে রবিউল ওরফে হৃদয়” নামে আমি কাউকে চিনি না। আমার সাথে তার এমনকি প্রাথমিক পরিচয়ও নাই।’
ছয় মাসের কম সময় আগে বাংলাদেশ পুলিশের প্রধানের পদ থেকে অবসরে গেছেন বেনজীর আহমেদ। এর আগে ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার, র‌্যাবের মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘আমি আমার ল এনফোর্সমেন্ট ক্যারিয়ারের পুরোটা সময় খুনি, সন্ত্রাসী, ড্রাগ ব্যবসায়ী, চোরাকারবারি, ভেজালকারী ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি, কখনোই সখ্যতা নয়।’
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে গত বুধবার এক জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আরাভ জুয়েলার্সের উদ্বোধন করা আরাভ খান এখন বাংলাদেশে তুমুল আলোচিত নাম। এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ক্রীড়া ও বিনোদনজগতের অনেক তারকাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ফেসবুকে একাধিক পোস্ট দিয়েছিলেন আরাভ খান। তখনই তাঁকে শনাক্ত করে ফেলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা। গোয়েন্দা পুলিশের তথ্যমতে, আরাভ জুয়েলার্স নামের ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক আরাভ খানের আসল নাম রবিউল ইসলাম। বাংলাদেশের গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় তাঁর বাড়ি। তিনি সোহাগ মোল্লা, হৃদয় শেখ, আপন—রকম কয়েকটি নামে পরিচিত। ২০১৮ সালের ৭ জুলাই ঢাকায় পুলিশের পরিদর্শক মামুন এমরান খান খুন হন। সেই খুনের আসামি হয়ে দেশ ছেড়েছিলেন রবিউল। ডিবি বলছে, দেশ থেকে পালিয়ে রবিউল ইসলাম প্রথমে ভারতে যান। সেখানে আরাভ খান নামে পাসপোর্ট সংগ্রহ করে দুবাইয়ে চলে যান। এখন তিনি দুবাইয়ের বড় সোনা ব্যবসায়ী।
আমরা আরাভ খানকে খুঁজে বের করতে সহযোগিতা করেছি: হিরো আলম : খুনের মামলার পলাতক আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানকে গ্রেপ্তার করতে না পারা পুলিশের ব্যর্থতা বলে মনে করেন আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম। তিনি বলছেন, ‘খুনের মামলায় অভিযুক্ত একজন আসামিকে এত দিন খুঁজে না পাওয়া বা গ্রেপ্তার করতে না পারার ব্যর্থতা পুলিশের। আমরা তাঁকে খুঁজে বের করতে পুলিশকে সহযোগিতা করেছি। আমরা ফেসবুকে পোস্ট না দিলে, দুবাই না গেলে আরাভ খানের আসল পরিচয় কেউ জানত না।’
দুবাই থেকে মুঠোফোনে গতকাল শনিবার একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। রবিউল ইসলামের সোনার দোকান ‘আরাভ জুয়েলার্সের’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ শেষে হিরো আলম আজ রোববার দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন। সকাল আটটায় ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা আছে তাঁর। তদন্তের প্রয়োজনে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও হিরো আলমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে, গোয়েন্দা পুলিশের এমন বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে হিরো আলম বলেন, ‘আইনের প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। যেকোনো মামলা তদন্তের প্রয়োজনে অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বা সন্দেহভাজন কোনো ব্যক্তিকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করতেই পারে। কিন্তু পুলিশ খুনের সঙ্গে সাকিব আল হাসানের মতো জনপ্রিয় ক্রিকেটার ও আমার সংশ্লিষ্টতা কোথায়, সেটা আগে পুলিশকে বলতে হবে।’
আরাভ খান পুলিশ কর্মকর্তা খুনের মামলার আসামি এই তথ্য আগে থেকে জানতেন না দাবি করে হিরো আলম বলেন, ‘তাঁর (আরাভ খান) সঙ্গে পরিচয় ফেসবুকে। একজন বাংলাদেশি উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি দাওয়াত করেছেন। আমরা প্রবাসী উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দিতে তারকারা সেখানে গিয়েছি। আরাভ খানের জায়গায় দুবাই থেকে যেকোনো বাংলাদেশি ব্যবসায়ী দোকান উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানালেও সেখানে যেতাম।’
হিরো আলম মন্তব্য করেন, ‘রবিউল ইসলাম সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে এসে স্বর্ণের দোকান খুলে ব্যবসা করছেন। এটা এত দিন অজানা ছিল। অজানাই হয়তো থাকত। কিন্তু সাকিব আল হাসান ও হিরো আলম তাঁর স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন করতে এসেছেন বলেই আরাভ খান সামনে চলে এসেছেন। আমাদের কারণেই তাঁর আসল পরিচয় উন্মোচিত হয়েছে। পলাতক আসামির সন্ধান পেতে সহযোগিতা করায় সাকিব আল হাসান ও হিরো আলমকে পুলিশের পক্ষ থেকে পুরস্কৃত করা উচিত। উল্টো পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের নামে আমাদের হয়রানি করার ফন্দি করছে।’