ক্রীড়া প্রতিবেদক: বিসিবি ইনডোরের বাইরের নেটে প্রায় ঘণ্টাখানেক ব্যাটিং করলেন লিটন দাস। তার ফেরার পথে নেটে গেলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। গত কয়েকদিন ব্যক্তিগত অনুশীলন করে চলেছেন মুশফিকুর রহিম, মেহেদী হাসান মিরাজরাও। জাতীয় দলের দায়িত্ব থেকে আপাতত এখন তাদের ছুটি। তবে সামনেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ, এই সময় নিজেদের তো আর ছুটি দেওয়া যায় না! মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে আগামী ১৪ জুন শুরু আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট। ওই ম্যাচের আগে মুশফিক-লিটনরা যেমন শুরু করেছেন অনুশীলন, তেমনি বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টও অনেকটা গুছিয়ে নিয়েছে নিজেদের পরিকল্পনা। আফগানদের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত একটিই টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে বৃষ্টিবিঘিœত ওই ম্যাচে ২২৪ রানে বিব্রতকর এক পরাজয়ের স্বাক্ষী হয় বাংলাদেশের ক্রিকেট। সেবার ম্যাচে প্রথম দিন থেকেই উইকেট নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন সাকিব আল হাসান। স্পিনবান্ধব উইকেটের আশায় কোনো বিশেষজ্ঞ পেসার ছাড়া খেলতে নামলেও অধিনায়ক সেই সময় বলেছিলেন, নিজেদের প্রত্যাশামত উইকেট পাননি তারা।
সবশেষ টেস্টের ওই নেতিবাচক অভিজ্ঞতার পর এবার আরেকটি আফগান টেস্টের আগে আলোচনার কেন্দ্রে থাকাই করা উইকেট। এই সংস্করণের নবীন দলটির বিপক্ষে কোন পরিকল্পনায় এগোবে বাংলাদেশ, তা নিয়ে চলছে জল্পনা। বাংলাদেশ দলের নির্বাচক হাবিবুল বাশার সঙ্গতকারণেই উইকেটবিষয়ক কৌতুহল মেটাতে চাননি। তবে বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপে সাবেক এই অধিনায়ক জানান, নিজেদের ছক তারা কষে রাখছেন। “(উইকেট নিয়ে) একটা পরিকল্পনা তো আছেই। আমরা আমাদের পরিকল্পনা নিয়ে যথেষ্ট পরিষ্কার। কেমন উইকেট চাই, কেমন উইকেটে খেলতে চাই, সেটা আমাদের কাছেই থাকুক। অবশ্যই কোনো খেলার আগে আমরা সেটি খোলাসা করব না।” “মিরপুরের উইকেট কেমন হতে পারে, না পারে সেটা সম্পর্কে আমাদের খুব ভালো ধারণা আছে। সেভাবেই আমাদের মনের মতো করে উইকেট তৈরি করা হচ্ছে।” সবশেষ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আঙুলে চোট পেয়ে ৬ সপ্তাহের জন্য মাঠের বাইরে ছিটকে গেছেন সাকিব আল হাসান। আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে তাকে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। সাকিবের অনুপস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই কমবে বাংলাদেশের স্পিন শক্তি।
রশিদ খান, কাইস আহমেদ, জহির খানদের নিয়ে আফগানিস্তানের স্পিন বিভাগ সমীহ জাগানিয়া। তবে এসব নিয়ে ভাবছেন না হাবিবুল। বরং স্পিনের পাশাপাশি নিজেদের পেস ইউনিটের ওপরও আস্থা রাখছেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক। “যদি আমাদের দলটা দেখেন, দুই বিভাগেই (পেস ও স্পিন) ভালো। সাকিবের বোলিং তো বাংলাদেশ অবশ্যই মিস করবে। তবে সাকিব ছাড়া তাইজুল, মিরাজ আছে, তারাও যথেষ্ট ভালো বল করে টেস্ট ম্যাচে। আমাদের ফাস্ট বোলিং ইউনিট অনেক সমৃদ্ধ। আমাদের যে রকম দরকার, দল অনুযায়ী কিন্তু ওইরকম সিদ্ধান্ত নিতে পারি। সেটা নিয়ে অনেক আগেই চিন্তা ভাবনা হয়ে গেছে।” “(উইকেটের) সিদ্ধান্ত কঠিন হচ্ছে না। কারণ আমরা এখন অনেক আত্মবিশ্বাসী দল। আফগানিস্তানও খুব ভালো দল। তাদের সঙ্গে সবশেষ টেস্ট ম্যাচ আমরা হেরেছিলাম। এবার অবশ্যই ভালো খেলতে চাই। আমার মনে হয় এখন দলটা অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। কোন উইকেটে খেলতে চাই, কোন উইকেটে খেলা উচিত, আমরা পরিস্কার। কাজেই যে সিদ্ধান্ত নেই, আমাদের অসুবিধা হবে না।” অন্য স্পিনারদের ওপর ভরসা রাখলেও ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই পারদর্শী সাকিবের অভাব থেকেই যাবে মনে করেন হাবিবুল। বরাবরের মতোই এই ঘাটতি পূরণে অন্যদের দায়িত্ব নেওয়ার তাগিদ নিলেন তিনি। “সাকিব না থাকলে একটা ক্রিকেটার কমে যায়। সাকিব থাকলে যেটা হয় আর কীৃ আসলে সাকিব-মুশফিক দুইজন থাকলে একটা বাড়তি সুবিধা পাই। আমরা একটা বাড়তি ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলতে পারি অথবা একজন বোলার বেশি নিয়ে খেলতে পারি। কন্ডিশন অনুযায়ী সেটা আমরা করে থাকি।” “সাকিবের না থাকাটা একটা ধাক্কা। বিশ্ব ক্রিকেটে খুব কম ক্রিকেটারই আছেন, যারা ব্যাটিং-বোলিং করে দলে আসতে পারে। সাকিবের ব্যাটিং-বোলিং আমরা মিস করব। আমার মনে হয় বাকি যারা দলে আছে তাদের দায়িত্বৃ।”
সংবাদ শিরোনাম ::
আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্টের পরিকল্পনায় ‘পরিষ্কার’ বাংলাদেশ
জনপ্রিয় সংবাদ