ঢাকা ০৮:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের চিরপ্রস্থান

  • আপডেট সময় : ০৩:০০:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ নভেম্বর ২০২১
  • ৪৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পর্যন্ত বাংলাদেশের দীর্ঘ পথ পরিক্রমার অগ্নিসাক্ষী, জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম আর নেই। ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল মঙ্গলবার বেলা আড়াইটায় তার মৃত্যু হয় বলে তার ছেলে বর্ষণ ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে জানান।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাংলা একাডেমির সভাপতির দায়িত্বেও ছিলেন। স্বাধীনতা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত এই শিক্ষক, গবেষকের বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
পেটের ব্যথা নিয়ে গত ৭ অক্টোবর রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি হয়েছিলেন অধ্যাপক রফিকুল। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার নিউমোনিয়া ধরা পড়ে। উন্নত চিকিৎসার জন্য পরিবারের সদস্যরা রফিকুল ইসলামকে ভারতে নিয়ে যেতে চাইলেও তিনি রাজি হননি। অবস্থার অবনতি হলে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টায় গত ২৫ নভেম্বর কৃত্রিমভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার বিকালে সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়।
বর্ষণ জানান, গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তার বাবার মরদেহ হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়া হয় উত্তরার বাসায়। সেখানে ১০ নম্বর সেক্টরের খালিদ বিন ওয়ালিদ মসজিদে এশার পর এক দফা জানাজা হয়। রাতে মরদেহ রাখা হবে হাসপাতালের হিমঘরে।
সবার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আজ বুধবার দুপুরে অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের কফিন নিয়ে যাওয়া হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। আসরের পর জনাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে। বর্ষণ বলেন, “আজিমপুরে আমাদের দাদার কবরে দাফন করার জন্যে আগেই বলে গেছেন বাবা।”
স্বাধীনতা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ, গবেষক, জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এক শোক বার্তায় তিনি বলেছেনে, “অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের মৃত্যু দেশের শিক্ষাঙ্গনের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি হিসেবে বঙ্গবন্ধুর নীতি ও আর্দশ জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।”
রাষ্ট্রপতি বলেন, “বাংলাদেশে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিকাশে তার অবদান দেশ ও জাতি চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।” রাষ্ট্রপতি প্রয়াত রফিকুল ইসলামের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবদেনা জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একুশে পদক ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত খ্যাতিমান লেখক, বিশিষ্ট নজরুল গবেষক, বাংলা অ্যাকাডেমির সভাপতি, জাতীয় অধ্যাপক এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শেখ হাসিনা এক শোকবার্তায় বলেন, ‘ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী এই প্রত্যক্ষ সাক্ষী যেসব ইতিহাস গ্রন্থিত করেছেন, তা বাংলা সাহিত্যের জন্য অমূল্য সম্পদ। নজরুল গবেষণায় ড. মো. রফিকুল ইসলামের অবদান অনন্য। বিশিষ্ট এই গুণী লেখক ও গবেষকের সাহিত্যকর্ম বাঙালি জাতিকে সবসময়ই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করবে। তিনি মনেপ্রাণে জাতির পিতার আদর্শকে ধারণ ও লালন করতেন এবং মুজিববর্ষের নানা আয়োজন সফল করতে দক্ষতার সঙ্গে কর্মকা- পরিচালনা করেছেন। বাংলা সাহিত্য ও গবেষণায় তিনি একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে বেঁচে থাকবেন।’ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তার মৃত্যুতে আমি আমার শিক্ষক, গুরুজন ও অভিভাবককে হারালাম। বিভিন্ন জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আমার প্রিয় শিক্ষকের উৎসাহ ও প্রেরণা আমাকে সাহস জুগিয়েছে এবং এগিয়ে যেতে শক্তি দিয়েছে।’ প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
নজরুল গবেষক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম নজরুল অধ্যাপক এবং নজরুল গবেষণা কেন্দ্রের প্রথম পরিচালক ছিলেন। এই ভাষাবিজ্ঞানী ও লেখক ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন; সেই সময়ের দুর্লভ আলোকচিত্রও তিনি ধারণ করেছেন।
বাঙালির মুক্তির সংগ্রামের এই প্রত্যক্ষ সাক্ষী সেইসব ইতিহাস গ্রন্থিত করেছেন তার লেখায়। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে প্রথম গ্রন্থ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষের ইতিহাসের প্রথম গ্রন্থটিসহ প্রায় ৩০টি বই তার হাত দিয়ে এসেছে। ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের সাবেক উপাচার্য রফিকুল ইসলাম এক সময় বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৮ সালে সরকার তাকে জাতীয় অধ্যাপক করে নেয়।
স্বাধীনতা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ, গবেষক ও লেখক ড. রফিকুল ইসলাম বেশ কয়েকটি শীর্ষ প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বপালন করেছেন। ২০২১ সালের ১৮ মে সরকার তাকে তিন বছরের জন্য বাংলা একাডেমির সভাপতির দায়িত্ব দেয়। মাতৃভাষা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবন, বিকাশ, চর্চা, প্রচার-প্রসারে অবদান রাখায় এই বছর তাকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক’ দেয় সরকার। বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের মৃত্যুতে কমিটির পক্ষ থেকে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।
এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, “মুজিববর্ষে জাতির পিতার স্মৃতি ও তার মহিমাময় কর্মের প্রতি কৃতজ্ঞ বাঙালি জাতির শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা জানানোর নানা আয়োজন সম্পন্ন করে তুলতে সভাপতি হিসেবে ড. মো. রফিকুল ইসলামের দিকনির্দেশনা ও আন্তরিক প্রচেষ্টা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। “তিনি জাতির পিতার আদর্শ ও চেতনাকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করতেন। তার জীবন ও সাহিত্যকর্ম ভবিষ্যত প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উজ্জীবিত করবে।”

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার লার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের চিরপ্রস্থান

আপডেট সময় : ০৩:০০:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ নভেম্বর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পর্যন্ত বাংলাদেশের দীর্ঘ পথ পরিক্রমার অগ্নিসাক্ষী, জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম আর নেই। ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল মঙ্গলবার বেলা আড়াইটায় তার মৃত্যু হয় বলে তার ছেলে বর্ষণ ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে জানান।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাংলা একাডেমির সভাপতির দায়িত্বেও ছিলেন। স্বাধীনতা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত এই শিক্ষক, গবেষকের বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
পেটের ব্যথা নিয়ে গত ৭ অক্টোবর রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি হয়েছিলেন অধ্যাপক রফিকুল। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার নিউমোনিয়া ধরা পড়ে। উন্নত চিকিৎসার জন্য পরিবারের সদস্যরা রফিকুল ইসলামকে ভারতে নিয়ে যেতে চাইলেও তিনি রাজি হননি। অবস্থার অবনতি হলে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টায় গত ২৫ নভেম্বর কৃত্রিমভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার বিকালে সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়।
বর্ষণ জানান, গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তার বাবার মরদেহ হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়া হয় উত্তরার বাসায়। সেখানে ১০ নম্বর সেক্টরের খালিদ বিন ওয়ালিদ মসজিদে এশার পর এক দফা জানাজা হয়। রাতে মরদেহ রাখা হবে হাসপাতালের হিমঘরে।
সবার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আজ বুধবার দুপুরে অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের কফিন নিয়ে যাওয়া হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। আসরের পর জনাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে। বর্ষণ বলেন, “আজিমপুরে আমাদের দাদার কবরে দাফন করার জন্যে আগেই বলে গেছেন বাবা।”
স্বাধীনতা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ, গবেষক, জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এক শোক বার্তায় তিনি বলেছেনে, “অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের মৃত্যু দেশের শিক্ষাঙ্গনের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি হিসেবে বঙ্গবন্ধুর নীতি ও আর্দশ জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।”
রাষ্ট্রপতি বলেন, “বাংলাদেশে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিকাশে তার অবদান দেশ ও জাতি চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।” রাষ্ট্রপতি প্রয়াত রফিকুল ইসলামের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবদেনা জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একুশে পদক ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত খ্যাতিমান লেখক, বিশিষ্ট নজরুল গবেষক, বাংলা অ্যাকাডেমির সভাপতি, জাতীয় অধ্যাপক এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শেখ হাসিনা এক শোকবার্তায় বলেন, ‘ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী এই প্রত্যক্ষ সাক্ষী যেসব ইতিহাস গ্রন্থিত করেছেন, তা বাংলা সাহিত্যের জন্য অমূল্য সম্পদ। নজরুল গবেষণায় ড. মো. রফিকুল ইসলামের অবদান অনন্য। বিশিষ্ট এই গুণী লেখক ও গবেষকের সাহিত্যকর্ম বাঙালি জাতিকে সবসময়ই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করবে। তিনি মনেপ্রাণে জাতির পিতার আদর্শকে ধারণ ও লালন করতেন এবং মুজিববর্ষের নানা আয়োজন সফল করতে দক্ষতার সঙ্গে কর্মকা- পরিচালনা করেছেন। বাংলা সাহিত্য ও গবেষণায় তিনি একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে বেঁচে থাকবেন।’ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তার মৃত্যুতে আমি আমার শিক্ষক, গুরুজন ও অভিভাবককে হারালাম। বিভিন্ন জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আমার প্রিয় শিক্ষকের উৎসাহ ও প্রেরণা আমাকে সাহস জুগিয়েছে এবং এগিয়ে যেতে শক্তি দিয়েছে।’ প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
নজরুল গবেষক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম নজরুল অধ্যাপক এবং নজরুল গবেষণা কেন্দ্রের প্রথম পরিচালক ছিলেন। এই ভাষাবিজ্ঞানী ও লেখক ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন; সেই সময়ের দুর্লভ আলোকচিত্রও তিনি ধারণ করেছেন।
বাঙালির মুক্তির সংগ্রামের এই প্রত্যক্ষ সাক্ষী সেইসব ইতিহাস গ্রন্থিত করেছেন তার লেখায়। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে প্রথম গ্রন্থ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষের ইতিহাসের প্রথম গ্রন্থটিসহ প্রায় ৩০টি বই তার হাত দিয়ে এসেছে। ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের সাবেক উপাচার্য রফিকুল ইসলাম এক সময় বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৮ সালে সরকার তাকে জাতীয় অধ্যাপক করে নেয়।
স্বাধীনতা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ, গবেষক ও লেখক ড. রফিকুল ইসলাম বেশ কয়েকটি শীর্ষ প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বপালন করেছেন। ২০২১ সালের ১৮ মে সরকার তাকে তিন বছরের জন্য বাংলা একাডেমির সভাপতির দায়িত্ব দেয়। মাতৃভাষা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবন, বিকাশ, চর্চা, প্রচার-প্রসারে অবদান রাখায় এই বছর তাকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক’ দেয় সরকার। বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের মৃত্যুতে কমিটির পক্ষ থেকে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।
এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, “মুজিববর্ষে জাতির পিতার স্মৃতি ও তার মহিমাময় কর্মের প্রতি কৃতজ্ঞ বাঙালি জাতির শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা জানানোর নানা আয়োজন সম্পন্ন করে তুলতে সভাপতি হিসেবে ড. মো. রফিকুল ইসলামের দিকনির্দেশনা ও আন্তরিক প্রচেষ্টা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। “তিনি জাতির পিতার আদর্শ ও চেতনাকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করতেন। তার জীবন ও সাহিত্যকর্ম ভবিষ্যত প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উজ্জীবিত করবে।”